উখিয়া নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৬/১০/২০২২ ৭:১২ এএম
প্রিন্সেস রীমা বিনতে বান্দার আল সৌদ

সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন ওপেকপ্লাস তেলের উৎপাদন কমিয়ে চলমান ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার পক্ষ নিচ্ছে বলে পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধ উপেক্ষা করে এই সিদ্ধান্তের পর সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে বাইডেন প্রশাসনের। এক মার্কিন সিনেটর আহ্বান জানিয়েছেন সৌদি আরবের সঙ্গে সব ধরনের সহযোগিতা বন্ধ করার জন্য। এমন অবস্থায় সৌদি-মার্কিন সম্পর্ক এবং ইউক্রেন যুদ্ধে অবস্থান নিয়ে মঙ্গলবার মুখ খুলেছেন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত প্রিন্সেস রীমা বিনতে বান্দার আল সৌদ।

২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রে সৌদি রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর এই প্রথম আন্তর্জাতিক কোনও সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছেন প্রিন্সেস রীমা। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এর বেকি অ্যান্ডারসনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি ওপেকপ্লাসের তেলের উৎপাদন কমানো, ওয়াশিংটনের সঙ্গে রিয়াদের সম্পর্ক এবং ইউক্রেন যুদ্ধে সৌদি আরবের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন।

প্রিন্সেস রীমা বলেছেন, ওপেকপ্লাসের তেলের উৎপাদন কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে রিয়াদের সম্পর্ক ‘ভিন্নমতের পর্যায়ে’ পৌঁছে গেলেও দীর্ঘদিনের দুই মিত্র দেশের সম্পর্ক এখনও শক্তিশালী রয়েছে। এমন সম্পর্কে মতভিন্নতা থাকতেই পারে।

তিনি বলেন, আমাদের সম্পর্ক শুধু অস্ত্র বিক্রি ও তেলের বিনিময়ের চেয়ে বেশি কিছু।

সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন ওপেকপ্লাস এই মাসের শুরুতে তেলের উৎপাদন প্রতিদিন ২ বিলিয়ন ব্যারেল কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধ উপেক্ষা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর ফলে বাইডেন প্রশাসন দীর্ঘ দিনের মিত্র সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক পুনবির্বেচনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তেলের উৎপাদন কমানোর সিদ্ধান্তটি রাশিয়ার স্বার্থে যায় এবং বিশেষভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জন্য রাজনৈতিকভাবে বিব্রতকর।

সৌদি কর্মকর্তারা দাবি করে আসছেন, তেল উৎপাদন কমানোর সিদ্ধান্তটি ওপেকপ্লাসভুক্ত দেশগুলোর অর্থনৈতিক স্বার্থে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু ওয়াশিংটনে এই সিদ্ধান্তটি সর্বদলীয় বিরোধিতার মুখে পড়েছে। বেশ কয়েকজন মার্কিন আইনপ্রণেতা সৌদি আরবের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। কেউ বলেছেন সৌদি আরবের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধ করতে। আবার কেউ বলেছেন সৌদি আরব থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার ও সম্পর্ক সীমিত করার জন্য।

রাশিয়াকে সহযোগিতা করছে সৌদি আরব–এমন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন প্রিন্সেস রীমা। তিনি বলেছেন, সৌদি আরব সবার সঙ্গে যুক্ত হয়, যারা আমাদের সঙ্গে একমত ও ভিন্নমত পোষণ করে সবার সঙ্গে কাজ করি আমরা।

সাক্ষাৎকারে তেলের উৎপাদন কমানোর সিদ্ধান্তটি সৌদি আরবের একার নয়, ২০টি দেশ সম্মিলিতভাবে নিয়েছে এবং এটি রাজনৈতিক নয়, অর্থনৈতিক পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করেছেন প্রিন্সেস রীমা।

তিনি বলেছেন, রাশিয়ার সঙ্গে সৌদি আরবের যে সম্পর্ক রয়েছে সেটির ফলে যুদ্ধ বন্দিদের মুক্ত করা সম্ভব হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের দুজন, ব্রিটেনের পাঁচজন, ক্রোয়েশিয়ার একজন এবং অন্য দেশের নির্বাচিত যুদ্ধ বন্দিদের মুক্ত করা হয়েছে।

প্রিন্সেস রীমা বলেন, আমরা আমাদের ভূমিকাকে মধ্যস্থতাকারী ও যোগাযোগকারী হিসেবে দেখি। আমরা ইউক্রেনকে মানবিক সহযোগিতা করেছি। আমরা ৪০০ মিলিয়ন ডলার দিয়েছি। ইউক্রেন ও পোল্যান্ডের কাজ করছি শরণার্থীদের সহযোগিতায়। এটিই আমাদের যুক্ত থাকার গুরুত্ব।

সৌদি রাষ্ট্রদূত প্রশ্ন রেখে বলেন, এটি কি রাশিয়ার পক্ষ নেওয়া? না। আমরা জাতিসংঘে ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড রাশিয়ার অংশ করার ইস্যুতে রেজুলেশনে আমরা দুবার মস্কোর বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছি।

পাঠকের মতামত

মিয়ানমারে জান্তাবিরোধী সশস্ত্র যুদ্ধ থেকে পিছু হটল প্রভাবশালী গোষ্ঠী

মিয়ানমারের জান্তাবিরোধী যুদ্ধে সবচেয়ে বড় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর একটি ইউনাইটেড ওয়া স্টেট আর্মি (ইউডব্লিউএসএ)। গত কয়েক ...

মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর নির্বাচন পরিকল্পনায় ভারতের সমর্থন

ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকা মিয়ানমারের সাধারণ নির্বাচনে পর্যবেক্ষক দল পাঠাবে ভারত, মিয়ানমারের রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম সোমবার ...